পূর্ণব্রহ্ম শ্রীশ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের সংক্ষিপ্ত জীবনী
পূর্ণব্রহ্ম শ্রীশ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর (১৮১১-১৮৭৭) হিন্দুধর্মীয় অবতার ও মতুয়া
সম্প্রদায়ের পরম পূজনীয় আরাধ্য ভগবান। ১২১৮ বঙ্গাব্দের (১৮১১) ফালগুন মাসের কৃষ্ণপক্ষীয়
ত্রয়োদশী তিথিতে গোপালগঞ্জ (বৃহত্তর ফরিদপুর) জেলার কাশিয়ানী উপজেলার
ওড়াকান্দি গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা যশোমন্ত ঠাকুর ছিলেন
একজন মৈথিলী ব্রাহ্মণ এবং নিষ্ঠাবান বৈষ্ণব।
শ্রীশ্রী হরিচাঁদের ঠাকুরের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ছিল খুবই সামান্য। পাঠশালা অতিক্রম করে তিনি কয়েক মাস মাত্র স্কুলে গিয়েছিলেন। পরে স্কুলের গন্ডিবদ্ধ জীবন ভাল না লাগায় স্কুল ত্যাগ করে তিনি মিশে যান সাধারণ মানুষের সঙ্গে। তিনি রাখাল বালকদের সঙ্গে ঘুরে বেড়ান গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে। তখন থেকেই তাঁর মধ্যে এক স্বতন্ত্র ভাবের প্রকাশ ঘটে। দৈহিক সৌন্দর্য, স্বভাব-সারল্য, সঙ্গীতপ্রিয়তা এবং পরোপকারী মনোভাবের কারণে তিনি বন্ধুদের নিকট খুবই প্রিয় ছিলেন।
ঠাকুরের বাল্যকাল ছিল অনেক ঘটনা বহুল। বয়োবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তার ক্রমশ আধ্যাত্মিক মহিমা প্রকাশ পেতে থাকে। তাঁর আধ্যাত্মিক মহিমা সম্পর্কে অনেক কিংবদন্তি আছে। তিনি আধ্যাত্মিক শক্তিবলে মানুষের রোগমুক্তি করতেন। তিনি চৈতন্যদেবের প্রেম-ভক্তির কথা সহজ-সরলভাবে প্রচার করতেন। তাঁর এই সাধন পদ্ধতিকে বলা হয় ‘মতুয়াবাদ’, আর এই আদর্শে যারা বিশ্বাসী তাদের বলা হয় ‘মতুয়া’।
মতুয়াবাদ সত্য, প্রেম ও পবিত্রতা এই তিনটি মূল স্তম্ভের ওপর প্রতিষ্ঠিত। এ মতবাদে সকল মানুষ সমান; জাতিভেদ বা সম্প্রদায়ভেদ মতুয়াবাদে স্বীকৃত নয়। তিনি সমাজের নিম্নস্তরের লোকদেরই বেশি করে কাছে টেনেছেন; তাদের যথার্থ সামাজিক মর্যাদা দিয়েছেন। তাই দেখা যায়, তাঁর শিষ্যদের সিংহভাগই সমাজের নিম্নশ্রেণীর লোক। হিন্দু ধর্মের প্রধান প্রধান শাস্ত্রগ্রন্থ পূর্ণব্রহ্ম শ্রীশ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর ছিলেন বিষ্ণুর অবতার তাই তো হিন্দু ধর্মের প্রধান প্রধান শাস্ত্রগ্রন্থে প্রমান পাওয়া যায়।
সন্ন্যাস-জীবনে বিশ্বাসী ছিলেন না; তিনি ছিলেন সংসারী এবং সংসার ধর্ম পালন করেই তিনি ঈশ্বরপ্রেমের বাণী প্রচার করেছেন। তিনি এদেশের অবহেলিত সম্প্রদায়কে ঐক্যবদ্ধ এবং সনাতন ধর্মে একনিষ্ঠ থাকার প্রেরণা যুগিয়েছেন। তাঁর ধর্ম সাধনার মূল কথা হলো-
‘দ্বাদশ আজ্ঞা’ দিয়েছেন সকল মতুয়াদের পালনের জন্য এবং এই ‘দ্বাদশ আজ্ঞা’ পালনের মাধ্যমে লুকিয়ে আছে মানব জীবনের মোক্ষম লাভের দিশা। সেগুলি হলো-
ইহলীলা সংবরণ করেন পূর্ণব্রহ্ম শ্রীশ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর ১২৮৪ বঙ্গাব্দের (১৮৭৭) ২৩ ফাল্গুন বুধবার। তাঁর জীবন ও আদর্শ নিয়ে কবি রসরাজ শ্রীমৎ তারকচন্দ্র সরকার
শ্রীশ্রীহরিলীলামৃত গ্রন্থ রচনা করেন। ঠাকুরের জন্মতিথি উপলক্ষে প্রতিবছর
ওড়াকান্দিতে দেশ-বিদেশের লক্ষ লক্ষ মতুয়ারা সম্মিলিত হন এবং তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা
নিবেদন করেন।
![]() |
শ্রীশ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের বাবা ও মা |
শ্রীশ্রী হরিচাঁদের ঠাকুরের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ছিল খুবই সামান্য। পাঠশালা অতিক্রম করে তিনি কয়েক মাস মাত্র স্কুলে গিয়েছিলেন। পরে স্কুলের গন্ডিবদ্ধ জীবন ভাল না লাগায় স্কুল ত্যাগ করে তিনি মিশে যান সাধারণ মানুষের সঙ্গে। তিনি রাখাল বালকদের সঙ্গে ঘুরে বেড়ান গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে। তখন থেকেই তাঁর মধ্যে এক স্বতন্ত্র ভাবের প্রকাশ ঘটে। দৈহিক সৌন্দর্য, স্বভাব-সারল্য, সঙ্গীতপ্রিয়তা এবং পরোপকারী মনোভাবের কারণে তিনি বন্ধুদের নিকট খুবই প্রিয় ছিলেন।
![]() |
শ্রীশ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর ও জগৎ জননী শান্তিদেবী |
ঠাকুরের বাল্যকাল ছিল অনেক ঘটনা বহুল। বয়োবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তার ক্রমশ আধ্যাত্মিক মহিমা প্রকাশ পেতে থাকে। তাঁর আধ্যাত্মিক মহিমা সম্পর্কে অনেক কিংবদন্তি আছে। তিনি আধ্যাত্মিক শক্তিবলে মানুষের রোগমুক্তি করতেন। তিনি চৈতন্যদেবের প্রেম-ভক্তির কথা সহজ-সরলভাবে প্রচার করতেন। তাঁর এই সাধন পদ্ধতিকে বলা হয় ‘মতুয়াবাদ’, আর এই আদর্শে যারা বিশ্বাসী তাদের বলা হয় ‘মতুয়া’।
মতুয়াবাদ সত্য, প্রেম ও পবিত্রতা এই তিনটি মূল স্তম্ভের ওপর প্রতিষ্ঠিত। এ মতবাদে সকল মানুষ সমান; জাতিভেদ বা সম্প্রদায়ভেদ মতুয়াবাদে স্বীকৃত নয়। তিনি সমাজের নিম্নস্তরের লোকদেরই বেশি করে কাছে টেনেছেন; তাদের যথার্থ সামাজিক মর্যাদা দিয়েছেন। তাই দেখা যায়, তাঁর শিষ্যদের সিংহভাগই সমাজের নিম্নশ্রেণীর লোক। হিন্দু ধর্মের প্রধান প্রধান শাস্ত্রগ্রন্থ পূর্ণব্রহ্ম শ্রীশ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর ছিলেন বিষ্ণুর অবতার তাই তো হিন্দু ধর্মের প্রধান প্রধান শাস্ত্রগ্রন্থে প্রমান পাওয়া যায়।
‘রাম হরি কৃষ্ণ হরি হরি
গোরাচাঁদ
সর্ব হরি মিলে এই পূর্ণ হরিচাঁদ’
সন্ন্যাস-জীবনে বিশ্বাসী ছিলেন না; তিনি ছিলেন সংসারী এবং সংসার ধর্ম পালন করেই তিনি ঈশ্বরপ্রেমের বাণী প্রচার করেছেন। তিনি এদেশের অবহেলিত সম্প্রদায়কে ঐক্যবদ্ধ এবং সনাতন ধর্মে একনিষ্ঠ থাকার প্রেরণা যুগিয়েছেন। তাঁর ধর্ম সাধনার মূল কথা হলো-
"গৃহেতে থাকিয়া যার হয় ভাবোদয়,
সেই যে পরম সাধু
জানিও নিশ্চয়"
‘দ্বাদশ আজ্ঞা’ দিয়েছেন সকল মতুয়াদের পালনের জন্য এবং এই ‘দ্বাদশ আজ্ঞা’ পালনের মাধ্যমে লুকিয়ে আছে মানব জীবনের মোক্ষম লাভের দিশা। সেগুলি হলো-
১. সদা সত্য কথা বলবে;
২.
পিতা-মাতাকে দেবতাজ্ঞানে ভক্তি করবে;
৩. নারীকে মাতৃজ্ঞান করবে;
৪. জগৎকে
ভালোবাসবে;
৫. সকল ধর্মের প্রতি উদার থাকবে;
৬. জাতিভেদ করবে না;
৭.
হরিমন্দির প্রতিষ্ঠা করবে;
৮. প্রত্যহ প্রার্থনা করবে;
৯. ঈশ্বরে আত্মদান
করবে;
১০. বহিরঙ্গে সাধু সাজবে না;
১১. ষড়রিপু বশে রাখবে এবং
১২. হাতে কাম
ও মুখে নাম করবে।।
No comments